প্রত্যয় নিউজ ডেস্ক: বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশ কুয়েত। দেশটির মুদ্রার মান সবথেকে বেশি। তবে ছোট্ট এই দেশটিতে তাদের জনসংখ্যার বেশি বাস করে প্রবাসী। তাদের দেশের জনসংখ্যা মাত্র ১৪ লাখ। কিন্তু প্রবাসী মিলিয়ে সেখানে আছে প্রায় ৪৮ লাখ।
সংখ্যার বিচারে দেখা যাচ্ছে, কুয়েতে দেশটির প্রকৃত নাগরিকদের চেয়ে প্রবাসীর সংখ্যা বেশি। কুয়েতি নাগরিকরা সেখানে সংখ্যালঘু। বিষয়টি সম্প্রতি ভাবনায় ফেলেছে কুয়েতের নীতি নির্ধারকদের। কুয়েত মূলত তেল নির্ভর অর্থনীতির দেশ। করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমেছে। ফলে অর্থের যোগানও কমেছে কুয়েতের। তাই ভবিষ্যৎ নিয়ে আগাম ভাবতে হচ্ছে।
কুয়েত কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা প্রবাসীর সংখ্যা ভবিষ্যতে ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনবে। যা দেশটির নাগরিকদের সংখ্যার এক তৃতীয়াংশের বেশি হবে না। অর্থাৎ বর্তমান হিসাবে সেখানে মাত্র পাঁচ লাখ প্রবাসী থাকার সুযোগ পাবে। দেশটিতে বর্তমানে যে ৩৪ লাখ প্রবাসী রয়েছে তার প্রায় অন্তত ৮০ ভাগ ফেরত পাঠানো হবে।
তবে হঠাৎ করেই এই বিপুল সংখ্যার প্রবাসীকে ফেরত পাঠানো হবে না এবং কোনো প্রবাসীর প্রতি অমানবিকও হবে না দেশটি। ধীরে ধীরে প্রবাসীর সংখ্যা কমানো হবে বলে পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ আল খালিদ আল সাবাহ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ বৃহস্পতিবার (৩ জুন) কুয়েতের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কুয়েত নিউজ এজেন্সি (কুনা) এর বরাত দিয়ে জানিয়েছে, কুয়েত প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশই অভিবাসী। এই ভারসাম্যহীনতা ভবিষ্যতে আমাদের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠবে। এর নিরসন প্রয়োজন।’
দেশটির বিশিষ্ট কলামিস্ট সাজেদ আল আবদালি বলেন, ‘কুয়েতে অভিবাসী শ্রমিকের প্রায় ৫০ শতাংশই গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই পরিবর্তন আনা প্রায় অসম্ভব।’ সৌদি আরব ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আরব নিউজের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে প্রায় সাড়ে তিন লাখ বাংলাদেশি কুয়েতে অভিবাসী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। কুয়েত সরকার শ্রমিকদের দেশে ফেরানো শুরু করলে বাংলাদেশি শ্রমিকদের ওপর কী ধরণের প্রভাব পড়বে তা এখনো নিশ্চিত নয়।
তবে ব্লুমবার্গের খবরে বলা হয়েছে, প্রথমে অদক্ষ শ্রমিকদের ফেরানো শুরু হবে। অপরদিকে সরকারি চাকরিতে যারা কর্মরত রয়েছেন তারা সুবিধা পেতে পারেন।